Header Ads

Header ADS

আমারে সাঁজাইয়া দিও || Amare Sajaia Dio || Islami Song

আমারে সাঁজাইয়া দিও।

কণ্ঠশিল্পীঃ আব্দুল আলীম

( ১ )
আমারে সাঁজাইয়া দিও নওশারো সাঁজন......
আমারে সাঁজাইয়া দিও নওশারো সাঁজন......
হইলে পরে মা..গো আমার........
হইলে পরে মা গো আমার বিয়েরো লগন...।

( ২ )
গোলাপ জলে ফু.....লে সাবান........মা...গো........
গোলাপ জলে ফু.....লে সাবান........
আমারে করাইও স্নান মা...গো...।
লোবানেরই সুবাশ দিও...
লোবানেরই সুবাশ দিও
সাদা পরাইও বসন........
আমারে সাঁজাইয়া দিও নওশারো সাঁজন........
আমারে সাঁজাইয়া দিও নওশারো সাঁজন........

( ৩ )
আমানে সাঁজনের কালে.....মা...গো
হইলে পেরেশান........
নাইওরিদের কাছে বইসা.....
শুইনো শেউলি গান.....
ইস্টি-কুটুম আইলে পরে........মা...গো........
ইস্টি-কুটুম আইলে পরে........
নেয় যেন মা কান্দে করে.....মা...গো
যাব, কাঁচা বাঁশের পালকি...চরে,
কাঁচা বাঁশের পালকি চরে যাব
মনেতে বাসন........
আমারে সাঁজাইয়া দিও নওশারো সাঁজন........
আমারে সাঁজাইয়া দিও নওশারো সাঁজন........

{সংগৃহীত}

সঙ্গীত বিশ্লেষণ:

এটি একটি মরমী সঙ্গীত। মরমী সঙ্গীত এ সাধারণত মৃত্যূকে স্মরণ করে রচনা করা হয়। এবার দেখা যাক উপরোল্লিখিত সঙ্গীতটিতে কবি কি বলতেও বুঝাতে চেয়েছেন।

(১) সঙ্গীতটির প্রথম পর্বে রচনাকারী তার মাকে ডেকে বলছেন তাকে নওশার সাঁজে সাঁজিয়ে দিতে যখন তার বিয়ের লগন আসবে। অর্থাৎ যখন তার মৃত্যূ হবে আর কবরে দাফন হওয়ার সময় হবে তখন যেন তাকে তার মা নিজ হাতে লাশের সাজে সাজিয়ে দেন।

(২) সঙ্গীতটির দ্বিতীয় পর্বে রচনাকারী বলতে চেয়েছেন যে, তার মা তাকে স্নান করিয়ে দিবে গোলাপ জলে, যেখানে ফুল ও সাবানের সংমিশ্রন থাকবে। স্নানের পর লোবানের সুবাশ দিতে বলেছেন। অতঃপর তাকে সাদা কাপরের বসন পরাইয়া দিতে বলেছেন। গোলাপ জল সাধারণত মানুষেরা কারো মৃত্যূর পর মৃত দেহের গোসলে ব্যবহার করে থাকে। আর দাফনের সময় মৃত ব্যক্তিকে সাদা কাফনের কাপর পরিয়ে কবরস্থ করা হয়।

(৩) সঙ্গীতটির তৃতীয় পর্বে রচনাকারী বলেন, তাকে সাঁজিয়ে দিতে যদি তার মা পেরেশোন হয়ে পরেন বা ক্লান্ত হয়ে পরেন, তবে তাকে দেখার জন্য যে সকল লোকজনেরা আসবে তাদের কাছে বসে সান্তনা বানী শুনবে। অতঃপর আত্মীয় স্বজন আসার পর যারা তার দাফন কার্য্যে থাকবে তারা যেন তাকে কাঁচা বাঁশের পালকিতে করে নিয়ে যায়। আর এটাই তার সাধনা।

উপরোক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায় যে, রচনাকারী সঙ্গীতটিতে আপাতত দৃষ্টিতে বিয়ের প্রসঙ্গের মতো কথা বললেও আসলে তা মৃত্যূর সাথে প্রাসঙ্গিক। কারণ মৃত্যূর সাথে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কাজ-কর্ম ও চিন্তা-চেতনার সাথে মিলে যায়। তাই এটিতে যেহেতু মরমী সঙ্গীতের কথা বলা হয়েছে বিধায় সঙ্গীতটির নাম মরমী সঙ্গীত দেয় যথার্থ ও সার্থক হয়েছে।

সারমর্ম:

গানটিতে বক্তা তার মাকে সম্বোধন করে বলছেন যে, যখন তার "বিয়ের লগন" আসবে, তখন যেন তাকে "নওশারো সাঁজন" বা বরের সাজে সাজিয়ে দেওয়া হয়। তিনি মাকে অনুরোধ করছেন গোলাপ জল ও সুগন্ধী সাবান দিয়ে তাকে স্নান করাতে, লোবানের সুবাস দিতে এবং সাদা পোশাক পরাতে। এই প্রস্তুতিগুলো আপাতদৃষ্টিতে বিয়ের জন্য হলেও, গানের শেষ অংশে এসে এটি ভিন্ন মাত্রা পায়। বক্তা বলছেন, তাকে সাজানোর সময় মা যেন বিচলিত না হন এবং নাইওরিদের সাথে বসে যেন শেউলি গান শোনেন (শেউলি গান সাধারণত বিদায় বা বিচ্ছেদের সুর বহন করে)। এরপর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিতটি আসে – তিনি বলছেন, যখন আত্মীয়-স্বজন আসবে, তারা যেন তাকে কাঁধে করে নিয়ে যায়, এবং তার আকাঙ্ক্ষা হলো কাঁচা বাঁশের পালকিতে চড়ে যাওয়া। কাঁচা বাঁশের পালকি বা কাঁধে করে নিয়ে যাওয়া সাধারণত মৃত্যুর পর মৃতদেহ বহন করার প্রতীক।

সুতরাং, গানের মূল ভাব হলো: বক্তা তার মৃত্যুকে জীবনের একটি অবশ্যম্ভাবী ও পবিত্র যাত্রা (যেন বিয়ে) হিসেবে দেখছেন। তিনি মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত হতে চান এবং তার অন্তিম যাত্রাকে বরের সাজে সজ্জিত হয়ে বরণ করতে চান। তিনি মৃত্যুকে ভয় না পেয়ে বরং একটি স্বাভাবিক পরিণতি হিসেবে গ্রহণ করছেন এবং মায়ের কাছে অনুরোধ করছেন যেন এই কঠিন সময়েও শোক না করে তাকে শেষ বিদায় জানানোর প্রস্তুতি নেন। এটি জীবন ও মৃত্যুর এক গভীর দার্শনিক উপলব্ধির গান, যেখানে মৃত্যুকেই এক ধরনের মিলন বা অন্তিম যাত্রারূপে চিত্রিত করা হয়েছে।


পোস্ট কি-ওয়ার্ডস:

আমারে সাঁজাইয়া দিও গানের কথা (Lyrics) | আব্দুল আলীম আমারে সাঁজাইয়া দিও (Artist + Song Title) | মরমী সঙ্গীত আমারে সাঁজাইয়া দিও (Genre + Song Title) | আব্দুল আলীম মরমী গান (Artist + Genre) | মৃত্যু নিয়ে বাংলা গান (Theme + Language) | আমারে সাঁজাইয়া দিও গানের ব্যাখ্যা/বিশ্লেষণ (Analysis/Meaning) | কাঁচা বাঁশের পালকি গানের অর্থ (Specific imagery/metaphor meaning) | আব্দুল আলীমের মরমী সঙ্গীতের বিশ্লেষণ (Artist + Genre + Analysis)

Frequently Asked Questions

প্রশ্ন: ‘আমারে সাঁজাইয়া দিও নওশারো সাঁজন’ সঙ্গীতটি কোন প্রকৃতির সঙ্গীত?
উত্তর: ‘আমারে সাঁজাইয়া দিও নওশারো সাঁজন’ সঙ্গীতটি একটি মরমী সঙ্গীত।

প্রশ্ন: ‘আমারে সাঁজাইয়া দিও নওশারো সাঁজন’ সঙ্গীতটিকে কিসের কথা স্মরণ করা হয়েছে?
উত্তর: ‘আমারে সাঁজাইয়া দিও নওশারো সাঁজন’ সঙ্গীতটিতে পরোক্ষভাবে মৃত্যূকে স্মরণ করা হয়েছে।

প্রশ্ন: ‘আমারে সাঁজাইয়া দিও নওশারো সাঁজন’ সঙ্গীতটিতে কে সুর দিয়েছেন?
উত্তর: ‘আমারে সাঁজাইয়া দিও নওশারো সাঁজন’ সঙ্গীতটিতে সুরের পাখি আব্দুল আলীম সুর দিয়েছেন।

পোস্ট ট্যাগ: আমারে সাঁজাইয়া দিও, মরমী সঙ্গীত, আব্দুল আলীম, কাঁচা বাঁশের পালকি

আর সঙ্গীত পেদে ডিজিট করুন-
১।
২।
৩।

No comments

Theme images by Lingbeek. Powered by Blogger.