পূর্ব দিগন্তের মুক্তা: চট্টগ্রাম বিভাগের মনোমুগ্ধকর
যত স্থান | Pearl of the Eastern Horizon: The Enchanting Destinations of
Chittagong Division:
উপস্থাপনা :
চট্টগ্রাম বিভাগ। ১১ টি জেলার সমন্বয়ে গঠিত চট্টগ্রাম
বিভাগ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ লীলাভূমি। পাহাড়, বন, সমুদ্র, নদী, উপত্যকা আর সমৃদ্ধ
ইতিহাসের অনন্য মিশ্রণ এই বিভাগকে পরিণত করেছে পর্যটকদের কাছে এক আকর্ষণীয় গন্তব্যে।
এই বিভাগের প্রতিটি জেলাতেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে অসংখ্য মনোমুগ্ধকর ও ঐতিহাসিক দর্শনীয়
স্থান। নিম্নে জেলাওয়ারী সেগুলোর একটি তথ্যবহুল প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হলো:
১. চট্টগ্রাম জেলা | Chattagram District | বাংলার
বাণিজ্যিক রাজধানী:
বন্দরনগরী চট্টগ্রাম শুধু দেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তিই
নয়, বরং পর্যটনের ক্ষেত্রেও এর গুরুত্ব অপরিসীম। এ জেলার উল্লেখযোগ্য দর্শনীয় স্থানগুলো
হলো: 🏡পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত: চট্টগ্রাম শহর থেকে ১৪ (চৌদ্দ) কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই সৈকতটি
পর্যটকদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। সূর্যাস্তের মনোরম দৃশ্য উপভোগের জন্য এটি একটি আদর্শ
স্থান। 🏡ফয়'স লেক: চট্টগ্রামের
পাহাড়তলী এলাকায় অবস্থিত এটি একটি কৃত্রিম হ্রদ। পাহাড়ের কোল ঘেঁষে তৈরী করা আঁকাবাঁকা
এই লেক এবং এর চারপাশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য পর্যটকদের মুগ্ধ করে। এখানে অ্যামিউজমেন্ট
পার্ক ও নৌকা ভ্রমণের সুব্যবস্থা রয়েছে। 🏡সীতাকুণ্ড ইকোপার্ক: ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে এটি অবস্থিত। এই ইকোপার্কে রয়েছে
সহস্রধারা ও সুপ্তধারা নামক দুটি মনোরম ঝর্ণা। সবুজ পাহাড় আর মনোরম ঝর্ণার সমন্বয়ে
এটি একটি বেশ মনোমুগ্ধকর ও আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র। 🏡চন্দ্রনাথ পাহাড়: সীতাকুণ্ডে অবস্থিত এই পাহাড়টি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের জন্য
একটি পবিত্র তীর্থস্থান। এই পাহাড়ের চূড়া থেকে আশেপাশের প্রাকৃতিক দৃশ্য অত্যন্ত
মনোমুগ্ধকর। 🏡পার্কি সমুদ্র সৈকত: আনোয়ারা উপজেলায় অবস্থিত এই সমুদ্র সৈকতটি ঝাউবনের জন্য সকলের
নিকট পরিচিত। তুলনামূলকভাবে নির্জন হওয়ায় যারা শান্ত পরিবেশে সমুদ্র উপভোগ করতে চান,
তাদের জন্য এটি একটি আদর্শ জায়গা। 🏡জাতি-তাত্ত্বিক জাদুঘর: চট্টগ্রামের আগ্রাবাদে অবস্থিত এই জাদুঘরে বাংলাদেশের বিভিন্ন
ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জীবন ও সংস্কৃতি সম্পর্কিত নানা রকম নিদর্শন সংরক্ষিত আছে। 🏡কমনওয়েলথ ওয়ার সিমেট্রি: কমনওয়েলথ ওয়ার সিমেট্রি মূলত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহত সৈন্যদের
সমাধিস্থল। চট্টগ্রাম জেলার অভ্যন্তরীণ মেহেদীবাগ গোল পাহাড় এলাকার পাশে বাদশা মিয়া
রোড এ অবস্থিত। এই এলাকাটি দামপাড়া নামেও পরিচিত। সৈন্যদের সমাধিস্থল হিসেবে নিরিবিলি
ও শান্ত পরিবেশের এই স্থানটি ঐতিহাসিক গুরুত্ব বহন করে।
২. কক্সবাজার জেলা | Cox's
Bazar District | বাংলার পর্যটন রাজধানী:
বিশ্বের দীর্ঘতম অবিচ্ছিন্ন প্রাকৃতিক বালুময় সমুদ্র
সৈকতের জন্য কক্সবাজার জেলা সারা বিশ্বে পরিচিত। এই জেলার প্রধান আকর্ষণগুলো হলো: 🏡কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত: লাবনী, সুগন্ধা ও কলাতলী পয়েন্ট নিয়ে গঠিত এই সুবিশাল সৈকতটি
পর্যটকদের প্রধান আকর্ষণ। প্রতিদিনই অসংখ্য পর্যটকের ভিড় দেখা যায় এই পর্যটন কেন্দ্রে। 🏡ইনানী সমুদ্র সৈকত: কক্সবাজার জেলা শহর থেকে প্রায় ২৫-৩০ কিলোমিটার দূরে ও দক্ষিণে
অবস্থিত এই সৈকতে রয়েছে প্রচুর প্রবাল পাথর, যা একে অন্য সৈকতগুলো থেকে আলাদা করেছে। 🏡হিমছড়ি: পাহাড়
ও ঝর্ণার সমন্বয়ে গঠিত হিমছড়ি বেশ জনপ্রিয় ও আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র। পাহাড়ের উপর
দাঁড়িয়ে দেখা সমুদ্রের দৃশ্য অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর। 🏡সেন্টমার্টিন দ্বীপ: এটি বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ। বাংলাদেশের মূল ভূখন্ড
থেকে সম্পূর্ণ আলাদা এই দ্বীপ টি। স্বচ্ছ নীল পানি, নারিকেল গাছের সারি আর সামুদ্রিক
জীবন এই দ্বীপকে করেছে অনন্য। 🏡ছেঁড়া দ্বীপ: সেন্টমার্টিনের সর্বদক্ষিণে অবস্থিত এই দ্বীপটি জোয়ারের সময়
সেন্টমার্টিনের মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অসাধারণ। 🏡মহেশখালী দ্বীপ: আদিনাথ মন্দিরের জন্য বিখ্যাত এই দ্বীপটি গুরুত্বপূর্ণ একটি
পর্যটন কেন্দ্র। এটিও মূল ভূখণ্ড থেকে কিছুটা দূরে অবস্থিত। 🏡ডুলাহাজারা সাফারি পার্ক: কক্সবাজারেরচকরিয়া উপজেলায় অবস্থিত এই পার্কে বিভিন্ন
প্রজাতির প্রাণী উন্মুক্ত পরিবেশে বিচরণ করে। যারা উন্মুক্ত পরিবেশে প্রাণীদের বিচরণ
অবলোকন করতে চান,তাদের জন্য উপযুক্ত জায়গা বটে।
৩. রাঙ্গামাটি জেলা | Rangamati District | বাংলার
রূপের রাণী:
'রূপের রানী' খ্যাত পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটি। এই
রাঙ্গামাটিতে রয়েছে অনেক দর্শনীয় স্থান। এই জেলার প্রধান দর্শনীয় স্থানসমূহ: 🏡কাপ্তাই হ্রদ: বাংলাদেশের বৃহত্তম কৃত্রিম হ্রদ হচ্ছে কাপ্তাই হ্রদ । এই হ্রদে
নৌকা ভ্রমণের মাধ্যমে এর অপার সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। 🏡ঝুলন্ত সেতু: এটি "সিম্বল অফ রাঙ্গামাটি" হিসেবে সুপরিচিত। এই
সেতুটি পর্যটকদের কাছে রাঙ্গামাটি জেলার প্রধান আকর্ষণ। 🏡শুভলং ঝর্ণা: সারা বছর এই ঝর্ণার সৌন্দর্য দেখা না গেলেও বর্ষা মৌসুমে এই
ঝর্ণাটি তার পূর্ণ রূপ ফিরে পায় এবং পর্যটকদের তার সুন্দর দৃশ্য দিয়ে মুগ্ধ করে। 🏡রাজবন বিহার: এই বিহারটি রাঙ্গামাটি জেলার একটি সাধারণ পর্যটন কেন্দ্র হলেও
এটি বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের একটি গুরুত্বপূর্ণ তীর্থস্থান এবং দেশের অন্যতম বৃহৎ বৌদ্ধ
মন্দির। 🏡সাজেক ভ্যালী: মেঘের রাজ্য হিসেবে পরিচিত সাজেক ভ্যালী বর্তমানে বাংলাদেশের
অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র। যেখানে প্রতিনিয়ত হাজারো মানুষের বিচরণ দেখতে পাওয়া
যায়।
৪. বান্দরবান জেলা | Bandorban District | বাংলার
পর্যটন নগরী:
বান্দরবান জেলা বাংলাদেশের একটি উল্লেখযোগ্য পর্যটন
নগরী। পাহাড়, মেঘ আর ঝর্ণার অপরূপ মেলবন্ধনের জন্য বান্দরবান পর্যটকদের কাছে এক স্বর্গরাজ্য।
এখানকার উল্লেখযোগ্য দর্শনীয় স্থানগুলো হলো: 🏡নীলগিরি: বান্দরবান
জেলার একটি মনোমুগ্ধকর পর্যটন এলাকা নীলগিরি। মেঘের স্পর্শ পাওয়ার জন্য এটি একটি আদর্শ
স্থান। এখান থেকে পাহাড়ের সারি ও মেঘের খেলা দেখা যায়। 🏡নীলাচল: বান্দরবান
শহর থেকে নিকটতম পর্যটন কেন্দ্রগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম। এ স্থান থেকে পুরো বান্দরবান
শহর ও তার চারপাশের পাহাড় দেখা যায়। 🏡নাফাখুম ও আমিয়াখুম জলপ্রপাত: বান্দরবানের রয়েছে আরো সুন্দরতম দুটি দৃশ্য তা হলো নাফাখুম
ও আমিয়াখুম জলপ্রপাত। তবে এই স্থানগুলো বেশ দুর্গম। যেখানে পর্যটকদের জন্য ভ্রমণ করা
তুলনামূলক কঠিন। 🏡বগালেক: এটি
বান্দরবান জেলার রমা উপজেলার অন্তর্ভূক্ত পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত। প্রায় ২৭০০ ফুট
উচ্চতায় অবস্থিত এই লেকটি তার নীল জলের জন্য বিখ্যাত। এখানে অসংখ্য পর্যটকের ভিড় দেখতে
পাওয়া যায়। 🏡স্বর্ণ মন্দির (বৌদ্ধ ধাতু জাদি): বান্দরবান শহরের কাছেই অবস্থিত এই মন্দিরটি তার স্থাপত্যশৈলীর
জন্য আকর্ষণীয়। এটি একদিকে যেমন পর্যটন কেন্দ্র আরেকদিকে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের কাছে
তীর্থস্থান।
৫. খাগড়াছড়ি জেলা | Khagrachhari District
| পর্যটকের আস্তানা:
বৈচিত্র্যময় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ খাগড়াছড়ি
জেলা। এখানকার প্রধান আকর্ষণগুলি হচ্ছে: 🏡আলুটিলা গুহা: আলুটিলা গুহা একটি প্রাকৃতিক গুহা এবং এখানকার অন্যতম প্রধান
পর্যটন আকর্ষণ। মশাল জ্বালিয়ে এই অন্ধকার ও শীতল গুহায় প্রবেশ এক রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা। 🏡রিসাং ঝর্ণা: আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্র থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে এই
ঝর্ণাটি অবস্থিত। খাগড়াছড়ি জেলার অন্যতম দর্শনীয়গুলির একটি এটি। 🏡হাতিমাথা (মায়ুং কপাল): এটি একটি দুর্গম পাহাড়। এই পাহাড়ের চূড়া থেকে চারপাশের মনোরম
দৃশ্য দেখা যায়। 🏡নিউজিল্যান্ড পাড়া: একদিকে পানখাইয়া পাড়া ও পেরাছড়ার সবুজ শস্যক্ষেত আর অন্যদিকে
পাহাড় আর মেঘের দৃশ্য নিউজিল্যান্ডের কথা মনে করিয়ে দেয় বলে স্থানীয়রা একে নিউজিল্যান্ড
পাড়া নামে ডাকে।
৬. কুমিল্লা জেলা | Cumilla District | বাংলার
ময়নামতি:
ঐতিহাসিক ও প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনে সমৃদ্ধ একটি
জেলা কুমিল্লা। এখানকার উল্লেখযোগ্য কিছু দর্শনীয় স্থান হলো: 🏡শালবন বৌদ্ধ বিহার: বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন সভ্যতার নিদর্শন এটি। বর্তমানে এখানে
প্রচুর পর্যটক দেখতে পাওয়া যায়। 🏡ময়নামতি জাদুঘর: শালবন বিহারের নিকটেই অবস্থিত ময়নামতি জাদুঘর। ‘এই জাদুঘরে
বিভিন্ন প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন সংরক্ষিত আছে। 🏡ময়নামতি ওয়ার সিমেট্রি: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহত সৈন্যদের আর একটি সমাধিস্থল এটি। 🏡ধর্মসাগর দীঘি: কুমিল্লা শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত একটি বিশাল দীঘি। প্রত্যহ
সকাল-বিকাল এখানে অসংখ্য দর্শনার্থী আসেন।
৭. ফেনী জেলা | Feni District | ঢাকা-চট্টগ্রাম
সংযোগস্থল:
ফেনী জেলার উল্লেখযোগ্য দর্শনীয় স্থানগুলো হলো: 🏡মুহুরী প্রজেক্ট: মুহুরী প্রজেক্টদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সেচ প্রকল্প এবং এখানে দেশের
প্রথম বায়ু বিদ্যুৎ কেন্দ্রও অবস্থিত। 🏡বিজয় সিংহ দীঘি: ফেনী শহরের ২ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত একটি ঐতিহাসিক দীঘি।
এখানে প্রত্যহ দর্শনার্থীদের ভিড় করতে দেখা যায়। 🏡শমসের গাজীর কেল্লা: একজন প্রভাবশালী জমিদারের এই কেল্লাটি ঐতিহাসিক গুরুত্ব বহন
করে। এটিও পর্যটন নগরীর নিদর্শনগুলির একটি।
৮. নোয়াখালী জেলা | Noakhali District | হাতিয়ার
জেলা নোয়াখালী :
দ্বীপ ও চরাঞ্চলের জন্য পরিচিত নোয়াখালী জেলার
প্রধান প্রধান আকর্ষণগুলি হচ্ছে: 🏡নিঝুম দ্বীপ: হরিণের অভয়ারণ্য হিসেবে
সুপরিচিত এই দ্বীপটি তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত। তবে এটির পূর্ব নাম ছিল
চর ওসমান। এখানে প্রতিনিয়ত প্রচুর পর্যটকের আগমন ঘটে। 🏡বজরা শাহী মসজিদ: এটি একটি পুরোনো ঐতিহাসিক মসজিদ, যা তার স্থাপত্যশৈলীর জন্য
পরিচিত। মসজিদটি বাংলাদেশের প্রত্নতাত্বিক নিদর্শনগুলির একটি। 🏡গান্ধী আশ্রম: সোনাইমুড়ী উপজেলায় অবস্থিত একটি ঐতিহাসিক স্থাপনা। এটিও নোয়াখালী
জেলার অন্যতম একটি পর্যটন কেন্দ্র।
৯. চাঁদপুর জেলা | Chandpur District | ইলিশের বাড়ি:
ইলিশের বাড়ি হিসেবে খ্যাত ও পরিচিত চাঁদপুর জেলা
পদ্মা, মেঘনা ও ডাকাতিয়া নদীর মিলনস্থলে অবস্থিত। এ জেলার প্রধান আকর্ষণ: 🏡তিন নদীর মোহনা (মোলহেড): পদ্মা, মেঘনা ও ডাকাতিয়া এই তিন নদীর মিলনস্থল। দেখতে যতোটা
সুন্দর লাগে ঠিক ততোটাই ভয়ংকর যে কোন নৌযান এ জন্য। 🏡মোহনপুর পর্যটন কেন্দ্র: চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর উপজেলায় অবস্থিত একটি জনপ্রিয় পর্যটন
কেন্দ্র। 🏡রূপসা জমিদার বাড়ি: ফরিদগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত একটি ঐতিহাসিক জমিদার বাড়ি। এখানেও
প্রচুর দর্শক সমাগম হয়ে থাকে।
১০. লক্ষ্মীপুর জেলা | Laxmipur District | সয়াল্যান্ড
অব বাংলাদেশ:
নারিকেল ও সুপারির জন্য বিখ্যাত লক্ষ্মীপুর জেলাটি
বাংলাদেশের সয়াল্যান্ড হিসেবেও পরিচিত। এই জেলাতেও রয়েছে বেশ কিছু দর্শনীয় স্থান।
যেমন: 🏡দালাল বাজার জমিদার বাড়ি: প্রায় ৪০০ (চারশত) বছরের পুরনো এই জমিদার বাড়িটি একটি ঐতিহাসিক
নিদর্শন। তবে বর্তমানে এটি ভুমি অফিসের কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। 🏡কামানখোলা জমিদার বাড়ি: দালাল বাজারের কাছেই অবস্থিত এটি আরেকটি প্রাচীন জমিদার বাড়ি।
এখানেও প্রায়শই দর্শনার্থীদের দেখা যায়। 🏡মজু চৌধুরীর হাট: লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার অন্তর্গত চরমণি মোহন ইউনিয়ন একটিঅবস্থিত। লোকসমাজে এটি একটি বাজার গ্রাম ও পর্যটন
কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। মেঘনা নদীর পাড়ে অবস্থিত এটি একটি মনোরম স্থান।
১১. ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা | Brahmanbaria
District | বাংলার সাংস্কৃতিক রাজধানী:
তিতাস নদীর অববাহিকায় অবস্থিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া
জেলা ঐতিহাসিক ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে সমৃদ্ধ। এই জেলাকেও বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক রাজধানী
বলা হয়ে থাকে। এই জেলার উল্লেখযোগ্য কিছু দর্শনীয় স্থানসমূহ হচ্ছে: 🏡হরিপুর জমিদার বাড়ি: তিতাস নদীর তীরে অবস্থিত এই জমিদার বাড়িটি তার স্থাপত্যের
জন্য পরিচিত। বর্তমানে এটি প্রাচীন স্থাপত্য প্রেমিদের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ দর্শনীয়
স্থান। 🏡কেল্লা শহীদ মাজার: একটি ঐতিহাসিক মাজার। এখানেও প্রত্যহ ভক্ত-আশেকানদের ভিড় করতে
দেখা যায়, যদিও এই স্থানে ইসলামের মূলনীতি বিরোধী অনেক কার্যকলাপ সংঘটিত হয়। 🏡ধরন্তি হাওর: বর্ষা মৌসুমে এই হাওরের দৃশ্য মনোরম রূপ ধারণ করে। সেখানে প্রচুর
দর্শনীর্থীদের ভিড় করতে দেখা যায়। শেষ কথা: চট্টগ্রাম বিভাগের প্রতিটি জেলাই নিজ নিজ স্বাতন্ত্র্য
ও সৌন্দর্য নিয়ে পর্যটকদের আকর্ষণ করে। সঠিক পরিকল্পনা নিয়ে ভ্রমণ করলে এই বিভাগের
প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য ও ঐতিহাসিক স্থানগুলো ভ্রমণকারীদের এক অবিস্মরণীয় অভিজ্ঞতা দেবে।
পোস্ট কি-ওয়ার্ড | Post Keyword :
চট্টগ্রাম বিভাগের সেরা দর্শনীয় স্থান | পাহাড়,
সমুদ্র ও ঝর্ণার দেশ: চট্টগ্রাম ভ্রমণ | কক্সবাজার ও সেন্টমার্টিনের সেরা ট্যুর প্ল্যান
| মেঘের রাজ্য সাজেক ভ্যালী ভ্রমণের আদ্যোপান্ত | রাঙ্গামাটি ও কাপ্তাই লেকের মনোমুগ্ধকর
সৌন্দর্য | বান্দরবানের নীলগিরি ও নীলাচল: মেঘের সাথে মিতালি | খাগড়াছড়ির আলুটিলা
গুহা ও রিসাং ঝর্ণার রোমাঞ্চ | কুমিল্লার প্রাচীন নিদর্শন: শালবন বিহার ও ময়নামতি
| বাংলাদেশের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত ভ্রমণ গাইড | চট্টগ্রাম বিভাগের ঐতিহাসিক ও প্রাকৃতিক
স্থানসমূহ
প্রশ্নোত্তর | FAQ
প্রশ্ন ১: চট্টগ্রাম বিভাগের কোন জেলায় বিশ্বের
দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত অবস্থিত? উত্তর: চট্টগ্রাম বিভাগের কক্সবাজার জেলায় বিশ্বের
দীর্ঘতম অবিচ্ছিন্ন প্রাকৃতিক বালুময় সমুদ্র সৈকত অবস্থিত। প্রশ্ন ২: 'মেঘের রাজ্য' হিসেবে পরিচিত সাজেক ভ্যালী
কোন জেলায়? উত্তর: 'মেঘের রাজ্য' হিসেবে পরিচিত সাজেক ভ্যালী
রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলায় অবস্থিত। প্রশ্ন ৩: বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ কোনটি
এবং এটি কোন জেলার অন্তর্গত? উত্তর: বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ হলো সেন্টমার্টিন,
যা কক্সবাজার জেলার অন্তর্গত। প্রশ্ন ৪: কাপ্তাই হ্রদ এবং বিখ্যাত ঝুলন্ত সেতু
কোন জেলায় দেখা যায়? উত্তর: কাপ্তাই হ্রদ এবং বিখ্যাত ঝুলন্ত সেতু রাঙ্গামাটি
জেলায় দেখা যায়। প্রশ্ন ৫: বান্দরবানের দুটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র
কী কী যেখান থেকে মেঘের খেলা উপভোগ করা যায়? উত্তর: বান্দরবানের দুটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র
হলো নীলগিরি এবং নীলাচল, যেখান থেকে মেঘ এবং পাহাড়ের অপরূপ দৃশ্য উপভোগ করা যায়। প্রশ্ন ৬: শালবন বৌদ্ধ বিহার ও ময়নামতি জাদুঘর
কোন জেলার ঐতিহাসিক স্থান? উত্তর: শালবন বৌদ্ধ বিহার ও ময়নামতি জাদুঘর কুমিল্লা
জেলার দুটি অন্যতম ঐতিহাসিক ও প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান। প্রশ্ন ৭: খাগড়াছড়ির বিখ্যাত প্রাকৃতিক গুহাটির
নাম কী? উত্তর: খাগড়াছড়ির বিখ্যাত প্রাকৃতিক গুহাটির নাম
আলুটিলা গুহা। প্রশ্ন ৮: পদ্মা, মেঘনা ও ডাকাতিয়া—এই তিন নদীর
মিলনস্থল কোথায় অবস্থিত? উত্তর: এই তিন নদীর মিলনস্থল চাঁদপুর জেলায় অবস্থিত,
যা স্থানীয়ভাবে 'মোলহেড' নামে পরিচিত।
No comments